নীরাদেবী দুপুরে নিজের ছোট ফোনটা নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলেন। আজকাল সকলকে দেখে তাঁরও বড় একটা ফোনের খুব শখ হয়েছে। ওটার মধ্যে দিয়ে নাকি সারা বিশ্বদর্শন হয়। ছেলেকে বলতেই বৌমা, নাতি হেসেই অস্থির," তুমি স্মার্টফোন নেওয়ার মত স্মার্ট কি? ওসব পারবেই না!" মনটা সেই থেকে বড্ড খারাপ তাঁর। নিজের টাকা দিয়ে নিজের পছন্দমত ফোনও কেনার স্বাধীনতা নেই তাঁর এই স্বাধীন দেশে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, ইংরেজদের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে দেশ স্বাধীন হয়েছে বটে, কিন্তু তাঁদের মত বয়স্করা নিজেদের পরিবারে আপনজনদের কাছেই পরাধীন রয়ে গেছেন আজও।
ইচ্ছেমত কোথাও যেতে পারেন না, খেতে পারেন না, কিনতে পারেন না...সারাক্ষণ শুনতে হয় একই বুলি, " তোমার বয়স হয়েছে তো..."। এদিকে সমাজের চোখে নীরাদেবী একজন স্বাধীন বৃদ্ধা যিনি নিজের খরচ নিজেই চালাতে সক্ষম। কেউ বোঝে না তাঁর মনোকষ্ট। সকলেরই একই বক্তব্য, সন্তান কত যত্নশীল! অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস পড়ে তাঁর।
